Loading...
Loading...

৩৭. সূরা সাফফাত

পারা ২৩, আয়াত ১৮২, রুকু (মাক্কী)

بِسْمِ اللَّـهِ الرَّ‌حْمَـٰنِ الرَّ‌حِيمِ

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে

  • অনুধাবন করো (সত্যবাণীসমূহ) যা চমৎকারভাবে সুবিন্যস্ত, ২-৫. যা সংযমের ডাক দিয়ে বিরত রাখে (পাপ থেকে) এবং যা (বিশ্ববাসীকে) স্মরণ করিয়ে দেয়, নিশ্চয়ই তোমাদের উপাস্য এক ও অদ্বিতীয়, যিনি মহাবিশ্বের সবকিছুর প্রতিপালক, প্রতিপালক সকল উদয়াচল (এবং অস্তাচলের)।

    وَالصَّافَّاتِ صَفًّا ﴿١﴾ فَالزَّاجِرَاتِ زَجْرًا ﴿٢﴾ فَالتَّالِيَاتِ ذِكْرًا ﴿٣﴾ إِنَّ إِلَـٰهَكُمْ لَوَاحِدٌ ﴿٤﴾ رَّبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ الْمَشَارِقِ ﴿٥﴾

  • ৬-১০. আমি পৃথিবীর নিকটবর্তী আকাশকে নক্ষত্রমণ্ডল দ্বারা সুশোভিত করেছি। প্রত্যেক শয়তানি শক্তি থেকে একে রক্ষা করেছি, যাতে শয়তানরা উচ্চতর জগতের (অস্তিত্বের অন্য মাত্রার) কিছু শুনতে না পারে। তারা হয় বিতাড়িত ও বহিষ্কৃত। (পরকালে) ওদের জন্যে রয়েছে চিরস্থায়ী শাস্তি। আর কেউ গোপনে অনুপ্রবেশ করে ফেললে চোখ ঝলসানো অগ্নিশিখা ধাওয়া করে ওকে।

    إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ ﴿٦﴾ وَحِفْظًا مِّن كُلِّ شَيْطَانٍ مَّارِدٍ ﴿٧﴾ لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى الْمَلَإِ الْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٍ ﴿٨﴾ دُحُورًا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ وَاصِبٌ ﴿٩﴾ إِلَّا مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ ثَاقِبٌ ﴿١٠﴾

  • ১১. সত্য অস্বীকারকারীদের জিজ্ঞেস করো, ওদেরকে সৃষ্টি করা বেশি কঠিন, না (মহাবিশ্বে) আমি অন্য যা যা সৃষ্টি করেছি? ওদের তো আমি স্রেফ কাদামাটি থেকে সৃষ্টি করেছি। ১২. (পুনরুত্থান অস্বীকার করাতে) তুমি বিস্মিত হচ্ছো আর ওরা তো একথা নিয়ে বিদ্রুপ করছে। ১৩. যখন ওদের সৎ-উপদেশ দেয়া হয়, তখন ওরা তা মানতে অস্বীকার করে। ১৪-১৫. যখন ওরা কোনো সুস্পষ্ট নিদর্শন দেখতে পায়, তখন ওরা তা নিয়ে বিদ্রুপ করে। বলে, ‘এ-তো স্রেফ জাদু। ১৬-১৭. এটা কী করে সম্ভব, আমরা মরে অস্থিমজ্জা মাটিতে মিশে যাওয়ার পরও আমাদের পুনরুত্থিত করা হবে? এমনকি আমাদের পূর্বপুরুষদেরও?’

    فَاسْتَفْتِهِمْ أَهُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَم مَّنْ خَلَقْنَا ۚ إِنَّا خَلَقْنَاهُم مِّن طِينٍ لَّازِبٍ ﴿١١﴾ بَلْ عَجِبْتَ وَيَسْخَرُونَ ﴿١٢﴾ وَإِذَا ذُكِّرُوا لَا يَذْكُرُونَ ﴿١٣﴾ وَإِذَا رَأَوْا آيَةً يَسْتَسْخِرُونَ ﴿١٤﴾ وَقَالُوا إِنْ هَـٰذَا إِلَّا سِحْرٌ مُّبِينٌ ﴿١٥﴾ أَإِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَامًا أَإِنَّا لَمَبْعُوثُونَ ﴿١٦﴾ أَوَآبَاؤُنَا الْأَوَّلُونَ ﴿١٧﴾

  • ১৮-২০. হে নবী! ওদের বলো, হাঁ, তোমরা পুনরুত্থিত ও লাঞ্ছিত হবে! এক ভয়ংকর শব্দ। তারপরই ওরা প্রত্যক্ষ করবে কঠিন বাস্তবতা। ওরা তখন আর্তনাদ করে উঠবে, ‘হায়! দুর্ভোগ আমাদের। এই তো মহাবিচার দিবস!’ ২১. তখন বলা হবে, এ সেই মহাবিচার দিবস, যা তোমরা অস্বীকার করতে।

    قُلْ نَعَمْ وَأَنتُمْ دَاخِرُونَ ﴿١٨﴾ فَإِنَّمَا هِيَ زَجْرَةٌ وَاحِدَةٌ فَإِذَا هُمْ يَنظُرُونَ ﴿١٩﴾ وَقَالُوا يَا وَيْلَنَا هَـٰذَا يَوْمُ الدِّينِ ﴿٢٠﴾ هَـٰذَا يَوْمُ الْفَصْلِ الَّذِي كُنتُم بِهِ تُكَذِّبُونَ ﴿٢١﴾

  • ২২-২৩. (তখন ফেরেশতাদের বলা হবে) সকল সহযোগীসহ সীমালঙ্ঘনকারীদের সমবেত করো। সেইসাথে সমবেত করো আল্লাহর পরিবর্তে ওরা যাদের উপাসনা করত, সেই উপাস্যদের। তারপর ওদেরকে নিয়ে চলো জাহান্নামের দিকে। ২৪-২৫. (ঠিক আছে) এবার ওদের একটু থামাও। ওদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ‘(হে সত্য অস্বীকারকারীরা! এখন) তোমাদের কী হয়েছে যে, তোমরা একে অপরকে সাহায্য করছ না?’

    احْشُرُوا الَّذِينَ ظَلَمُوا وَأَزْوَاجَهُمْ وَمَا كَانُوا يَعْبُدُونَ ﴿٢٢﴾ مِن دُونِ اللَّـهِ فَاهْدُوهُمْ إِلَىٰ صِرَاطِ الْجَحِيمِ ﴿٢٣﴾ وَقِفُوهُمْ ۖ إِنَّهُم مَّسْئُولُونَ ﴿٢٤﴾ مَا لَكُمْ لَا تَنَاصَرُونَ ﴿٢٥﴾

  • ২৬-২৭. সেদিন ওরা পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করবে। (কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।) তাই ওরা একজন আরেকজনকে বলবে (আমাদের অতীতের পাপের বোঝা থেকে মুক্ত করে দাও)। ২৮. (দুর্বলেরা ক্ষমতাদর্পীদের বলবে) তোমরা তো আমাদের ওপর জোর করে সব চাপিয়ে দিয়েছ।

    بَلْ هُمُ الْيَوْمَ مُسْتَسْلِمُونَ ﴿٢٦﴾ وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَاءَلُونَ ﴿٢٧﴾ قَالُوا إِنَّكُمْ كُنتُمْ تَأْتُونَنَا عَنِ الْيَمِينِ ﴿٢٨﴾

  • ২৯-৩১. জবাবে ক্ষমতাদর্পীরা বলবে, ‘তোমরাই তো বিশ্বাস স্থাপন করো নি। তাছাড়া তোমাদের ওপর তো আমাদের কোনো কর্তৃত্ব ছিল না। তোমরা নিজেরাই অবাধ্য ছিলে। শেষ পর্যন্ত আমাদের প্রতিপালকের কথাই সত্য হলো। এখন অবধারিত শাস্তি ভোগ করো।’

    قَالُوا بَل لَّمْ تَكُونُوا مُؤْمِنِينَ ﴿٢٩﴾ وَمَا كَانَ لَنَا عَلَيْكُم مِّن سُلْطَانٍ ۖ بَلْ كُنتُمْ قَوْمًا طَاغِينَ ﴿٣٠﴾ فَحَقَّ عَلَيْنَا قَوْلُ رَبِّنَا ۖ إِنَّا لَذَائِقُونَ ﴿٣١﴾

  • ৩২. ক্ষমতাদর্পীরা ওদেরকে বলবে, (যদি এটা সত্যও হয়ে থাকে যে) আমরা তোমাদের বিভ্রান্ত করেছিলাম; বাস্তবতা হচ্ছে, আমরাও ঘোর বিভ্রান্তির মধ্যে ছিলাম। ৩৩. এভাবে ওরা সেদিন সকলেই শাস্তির ভাগীদার হবে।

    فَأَغْوَيْنَاكُمْ إِنَّا كُنَّا غَاوِينَ ﴿٣٢﴾ فَإِنَّهُمْ يَوْمَئِذٍ فِي الْعَذَابِ مُشْتَرِكُونَ ﴿٣٣﴾

  • ৩৪-৩৬. পাপে নিমজ্জিতদের ব্যাপারে এটাই নির্ধারিত প্রক্রিয়া। কারণ যখনই ওদের বলা হতো, ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই’, ওরা অহংকারে তা অগ্রাহ্য করে বলত, ‘আমরা কি এক উন্মাদ কবির কথায় আমাদের (বাপদাদাদের) উপাস্যদের বাদ দেবো?’

    إِنَّا كَذَٰلِكَ نَفْعَلُ بِالْمُجْرِمِينَ ﴿٣٤﴾ إِنَّهُمْ كَانُوا إِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا اللَّـهُ يَسْتَكْبِرُونَ ﴿٣٥﴾ وَيَقُولُونَ أَئِنَّا لَتَارِكُو آلِهَتِنَا لِشَاعِرٍ مَّجْنُونٍ ﴿٣٦﴾

  • ৩৭-৩৯. না, (যাকে ওরা উন্মাদ কবি বলছে) সে সত্য উপস্থাপন করেছে এবং পূর্ববর্তী রসুলদের (শিক্ষাকে) সত্য বলে স্বীকার করেছে। তোমরা অবশ্যই (পরকালে) কঠিন শাস্তি ভোগ করবে। অবশ্যই সে শাস্তি হবে তোমাদের কৃতকর্মের পরিণতি।

    بَلْ جَاءَ بِالْحَقِّ وَصَدَّقَ الْمُرْسَلِينَ ﴿٣٧﴾ إِنَّكُمْ لَذَائِقُو الْعَذَابِ الْأَلِيمِ ﴿٣٨﴾ وَمَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ ﴿٣٩﴾

  • ৪০-৪৯. পক্ষান্তরে যারা আল্লাহর বিশুদ্ধচিত্ত বান্দা, তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত জীবনোপকরণ—সব ধরনের সুস্বাদু ফলমূল ও নেয়ামতে পরিপূর্ণ প্রশান্তিময় জান্নাত। সম্মানিত মেহমান হিসেবে মুখোমুখি আসনে হেলান দিয়ে বসবে তারা। পানপাত্রে তাদের পরিবেশন করা হবে প্রবহমান ঝর্নার শুভ্র সমুজ্জ্বল বিশুদ্ধ সুস্বাদু পানীয়। এ পানীয়ে ক্ষতিকর কিছু থাকবে না, হবে না কোনো মাতলামি (শুধু মন ভরে যাবে অপার্থিব আনন্দে)। তাদের সাথে থাকবে সুন্দর আঁখির পবিত্র দৃষ্টির সমুজ্জ্বল সাথিরা, তারা যেন পালকের নিচে লুকানো ডিমের মতো (কান্তিময়)।

    إِلَّا عِبَادَ اللَّـهِ الْمُخْلَصِينَ ﴿٤٠﴾ أُولَـٰئِكَ لَهُمْ رِزْقٌ مَّعْلُومٌ ﴿٤١﴾ فَوَاكِهُ ۖ وَهُم مُّكْرَمُونَ ﴿٤٢﴾ فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ ﴿٤٣﴾ عَلَىٰ سُرُرٍ مُّتَقَابِلِينَ ﴿٤٤﴾ يُطَافُ عَلَيْهِم بِكَأْسٍ مِّن مَّعِينٍ ﴿٤٥﴾ بَيْضَاءَ لَذَّةٍ لِّلشَّارِبِينَ ﴿٤٦﴾ لَا فِيهَا غَوْلٌ وَلَا هُمْ عَنْهَا يُنزَفُونَ ﴿٤٧﴾ وَعِندَهُمْ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ عِينٌ ﴿٤٨﴾ كَأَنَّهُنَّ بَيْضٌ مَّكْنُونٌ ﴿٤٩﴾

  • ৫০-৫৩. জান্নাতে তারা পারস্পরিক কথোপকথনে জিজ্ঞেস করবে (দুনিয়ার অতীত জীবন সম্পর্কে)। কেউ কেউ বলবে, দুনিয়ায় আমার এক সঙ্গী ছিল। সেই সঙ্গী বলত, তুমি কি বিশ্বাস করো যে, মৃত্যুর পর যখন ধুলা ও হাড়ে রূপান্তরিত হবো, তারপর পুনরুত্থিত করে বিচার করা হবে?

    فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَاءَلُونَ ﴿٥٠﴾ قَالَ قَائِلٌ مِّنْهُمْ إِنِّي كَانَ لِي قَرِينٌ ﴿٥١﴾ يَقُولُ أَإِنَّكَ لَمِنَ الْمُصَدِّقِينَ ﴿٥٢﴾ أَإِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَامًا أَإِنَّا لَمَدِينُونَ ﴿٥٣﴾

  • ৫৪-৫৯. তখন তাদের বলা হবে, তোমরা কি তাকে দেখতে চাও, সে কোথায় আছে? তারপর সে তার সঙ্গীকে জাহান্নামের মাঝখানে দেখতে পাবে। তখন সে বলবে, ‘আল্লাহর শপথ! ও-তো আমাকে প্রায় ধ্বংসই করে ফেলেছিল। আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ না থাকলে আমিও তো এই শাস্তিভোগকারীদের একজন হতাম। যা-ই হোক, (হে আমার জান্নাতের বন্ধুরা!) প্রথম মৃত্যুর পর আমাদের তো এখন আর কোনো মৃত্যু হবে না আর আমাদের কখনো শাস্তিও পেতে হবে না।’

    قَالَ هَلْ أَنتُم مُّطَّلِعُونَ ﴿٥٤﴾ فَاطَّلَعَ فَرَآهُ فِي سَوَاءِ الْجَحِيمِ ﴿٥٥﴾ قَالَ تَاللَّـهِ إِن كِدتَّ لَتُرْدِينِ ﴿٥٦﴾ وَلَوْلَا نِعْمَةُ رَبِّي لَكُنتُ مِنَ الْمُحْضَرِينَ ﴿٥٧﴾ أَفَمَا نَحْنُ بِمَيِّتِينَ ﴿٥٨﴾ إِلَّا مَوْتَتَنَا الْأُولَىٰ وَمَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِينَ ﴿٥٩﴾

  • ৬০-৬১. নিশ্চয়ই পরকালের সাফল্যই মহাসাফল্য। আর এ সাফল্য অর্জনের জন্যেই সৎকর্মশীলদের আল্লাহর পথে প্রাণান্ত পরিশ্রম করা উচিত!

    إِنَّ هَـٰذَا لَهُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ ﴿٦٠﴾ لِمِثْلِ هَـٰذَا فَلْيَعْمَلِ الْعَامِلُونَ ﴿٦١﴾

  • ৬২-৬৭. (হে বিশ্বাসীগণ!) বলো, জান্নাতের আপ্যায়ন উত্তম, না জাহান্নামের জাক্কুম ফলের? সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্যে আমি পরীক্ষাস্বরূপ এ গাছ সৃষ্টি করেছি। এ গাছ জাহান্নামের তলদেশ থেকে উদ্‌গত হয়। এর ছড়াগুলো যেন শয়তানের মাথার মতো। পাপাচারীরা (ক্ষুধার যন্ত্রণায়) এটা খেতে বাধ্য হবে এবং তা দিয়েই উদরপূর্তি করবে। তার ওপরে ওদের পান করতে হবে ফুটন্ত আঠালো পানীয়।

    أَذَٰلِكَ خَيْرٌ نُّزُلًا أَمْ شَجَرَةُ الزَّقُّومِ ﴿٦٢﴾ إِنَّا جَعَلْنَاهَا فِتْنَةً لِّلظَّالِمِينَ ﴿٦٣﴾ إِنَّهَا شَجَرَةٌ تَخْرُجُ فِي أَصْلِ الْجَحِيمِ ﴿٦٤﴾ طَلْعُهَا كَأَنَّهُ رُءُوسُ الشَّيَاطِينِ ﴿٦٥﴾ فَإِنَّهُمْ لَآكِلُونَ مِنْهَا فَمَالِئُونَ مِنْهَا الْبُطُونَ ﴿٦٦﴾ ثُمَّ إِنَّ لَهُمْ عَلَيْهَا لَشَوْبًا مِّنْ حَمِيمٍ ﴿٦٧﴾

  • ৬৮-৭০. এ পাপাচারীদের পরে নিক্ষেপ করা হবে জাহান্নামে। ওরা ওদের বাপদাদাদের বিপথগামী হিসেবেই পেয়েছিল। আর ওরাও (সহজাত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ না করে) তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছিল।

    ثُمَّ إِنَّ مَرْجِعَهُمْ لَإِلَى الْجَحِيمِ ﴿٦٨﴾ إِنَّهُمْ أَلْفَوْا آبَاءَهُمْ ضَالِّينَ ﴿٦٩﴾ فَهُمْ عَلَىٰ آثَارِهِمْ يُهْرَعُونَ ﴿٧٠﴾

  • ৭১-৭৩. অবশ্য ওদের আগেও পূর্ববর্তীদের অধিকাংশই বিপথগামী হয়েছিল, যদিও আমি তাদের মাঝে সতর্ককারী পাঠিয়েছিলাম। লক্ষ করো, যাদের সতর্ক করা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তাদের পরিণতি কী হয়েছিল! ৭৪. আল্লাহর সত্যিকার বান্দাদের কথা আলাদা। (সহজাত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ না করায় তারা ছাড়া অধিকাংশ মানুষই বিপথপ্রবণ।)

    وَلَقَدْ ضَلَّ قَبْلَهُمْ أَكْثَرُ الْأَوَّلِينَ ﴿٧١﴾ وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا فِيهِم مُّنذِرِينَ ﴿٧٢﴾ فَانظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُنذَرِينَ ﴿٧٣﴾ إِلَّا عِبَادَ اللَّـهِ الْمُخْلَصِينَ ﴿٧٤﴾

  • ৭৫-৭৯. নূহ আমার কাছে প্রার্থনা করেছিল। দেখ, কত সুন্দরভাবে আমি তার প্রার্থনা কবুল করেছিলাম! পরিবারবর্গসহ আমি তাকে মহাবিপদ থেকে রক্ষা করেছিলাম। তার বংশধারা জমিনে বিস্তার লাভ করল। আর পরবর্তী প্রজন্মপরম্পরায় তাকে স্মরণীয় করে রাখলাম। ‘উভয়কালেই নূহের প্রতি সালাম!’ ৮০-৮২. সৎকর্মশীলদের আমি এভাবেই পুরস্কৃত করে থাকি। নূহ ছিল আমার সত্যিকার বিশ্বাসী বান্দাদের একজন। পরে বিপথগামী সকলকে আমি পানিতে নিমজ্জিত করেছিলাম।

    وَلَقَدْ نَادَانَا نُوحٌ فَلَنِعْمَ الْمُجِيبُونَ ﴿٧٥﴾ وَنَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ مِنَ الْكَرْبِ الْعَظِيمِ ﴿٧٦﴾ وَجَعَلْنَا ذُرِّيَّتَهُ هُمُ الْبَاقِينَ ﴿٧٧﴾ وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِينَ ﴿٧٨﴾ سَلَامٌ عَلَىٰ نُوحٍ فِي الْعَالَمِينَ ﴿٧٩﴾ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ ﴿٨٠﴾ إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ ﴿٨١﴾ ثُمَّ أَغْرَقْنَا الْآخَرِينَ ﴿٨٢﴾

  • ৮৩-৮৭. চেতনার দিক থেকে ইব্রাহিম ছিল নূহের উত্তরসূরি। স্মরণ করো! যখন সে তার প্রতিপালকের সামনে শুদ্ধচিত্তে উপস্থিত হয়েছিল, যখন সে তার পিতা ও সম্প্রদায়কে জিজ্ঞেস করেছিল, তোমরা কীসের উপাসনা করছ? তোমরা কি আল্লাহর পরিবর্তে অলীক উপাস্যের কাছে (মাথা নত করতে) চাও? মহাবিশ্বের প্রতিপালককে তোমরা কী ভাবো?

    وَإِنَّ مِن شِيعَتِهِ لَإِبْرَاهِيمَ ﴿٨٣﴾ إِذْ جَاءَ رَبَّهُ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ ﴿٨٤﴾ إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِ مَاذَا تَعْبُدُونَ ﴿٨٥﴾ أَئِفْكًا آلِهَةً دُونَ اللَّـهِ تُرِيدُونَ ﴿٨٦﴾ فَمَا ظَنُّكُم بِرَبِّ الْعَالَمِينَ ﴿٨٧﴾

  • ৮৮-৯০. তারপর ইব্রাহিম নক্ষত্ররাজির দিকে তাকাল। বলল, আমি (তোমাদের উপাস্যদের নিয়ে মর্ম) পীড়ায় ভুগছি। সম্প্রদায়ের লোকেরা তখন তাকে একা রেখে চলে গেল।

    فَنَظَرَ نَظْرَةً فِي النُّجُومِ ﴿٨٨﴾ فَقَالَ إِنِّي سَقِيمٌ ﴿٨٩﴾ فَتَوَلَّوْا عَنْهُ مُدْبِرِينَ ﴿٩٠﴾

  • ৯১-৯৪. তারপর সে সন্তর্পণে তাদের দেবালয়ে ঢুকল এবং মূর্তিগুলোকে জিজ্ঞেস করল, (তোমাদের সামনে নিবেদিত) খাবার খাচ্ছ না কেন? তোমাদের কী হয়েছে, কথা বলো না কেন? এরপর মূর্তিগুলোর ওপর সবলে আঘাত হানল। (খবর পেয়ে) সম্প্রদায়ের লোকেরা তার দিকে ছুটে এলো।

    فَرَاغَ إِلَىٰ آلِهَتِهِمْ فَقَالَ أَلَا تَأْكُلُونَ ﴿٩١﴾ مَا لَكُمْ لَا تَنطِقُونَ ﴿٩٢﴾ فَرَاغَ عَلَيْهِمْ ضَرْبًا بِالْيَمِينِ ﴿٩٣﴾ فَأَقْبَلُوا إِلَيْهِ يَزِفُّونَ ﴿٩٤﴾

  • ৯৫-৯৬. ইব্রাহিম ওদেরকে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমরা নিজেরাই যাদেরকে পাথর খোদাই করে তৈরি করেছ, তাদের উপাসনা কেন করো? প্রকৃতপক্ষে আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে ও তোমরা যা তৈরি করো তা-ও।’

    قَالَ أَتَعْبُدُونَ مَا تَنْحِتُونَ ﴿٩٥﴾ وَاللَّـهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ ﴿٩٦﴾

  • ৯৭. ওরা চিৎকার করে বলে উঠল, ‘মঞ্চ তৈরি করো। তারপর সেখান থেকে ওকে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করো।’ ৯৮. ওরা ইব্রাহিমের অনিষ্ট করার চক্রান্তে লিপ্ত হলো। পরিণামে আমি ওদের (চক্রান্ত ব্যর্থ করে) অধঃপতিত করলাম।

    قَالُوا ابْنُوا لَهُ بُنْيَانًا فَأَلْقُوهُ فِي الْجَحِيمِ ﴿٩٧﴾ فَأَرَادُوا بِهِ كَيْدًا فَجَعَلْنَاهُمُ الْأَسْفَلِينَ ﴿٩٨﴾

  • ৯৯-১০১. ইব্রাহিম বলল, ‘নিশ্চয়ই আমি এ স্থান ছেড়ে প্রতিপালকের পথে যাব। তিনিই আমাকে পথ দেখাবেন।’ এরপর ইব্রাহিম প্রার্থনা করল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে সৎকর্মশীল সন্তান দান করো!’ আমি তাকে এক ধীরস্থির বুদ্ধিমান পুত্রের সুসংবাদ দিলাম।

    وَقَالَ إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَىٰ رَبِّي سَيَهْدِينِ ﴿٩٩﴾ رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ ﴿١٠٠﴾ فَبَشَّرْنَاهُ بِغُلَامٍ حَلِيمٍ ﴿١٠١﴾

  • ১০২. ছেলে যখন পিতার কাজকর্মে অংশগ্রহণ করার মতো বড় হলো, তখন ইব্রাহিম একদিন তাকে বলল, ‘হে আমার প্রিয় পুত্র! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে কোরবানি দিতে হবে। এখন বলো, এ ব্যাপারে তোমার মত কী? ইসমাইল জবাবে বলল, ‘হে আমার পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তা-ই করুন। ইনশাল্লাহ! (আল্লাহর ইচ্ছায়) আপনি আমাকে বিপদে ধৈর্যশীলদের একজন হিসেবেই পাবেন।’

    فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ السَّعْيَ قَالَ يَا بُنَيَّ إِنِّي أَرَىٰ فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ فَانظُرْ مَاذَا تَرَىٰ ۚ قَالَ يَا أَبَتِ افْعَلْ مَا تُؤْمَرُ ۖ سَتَجِدُنِي إِن شَاءَ اللَّـهُ مِنَ الصَّابِرِينَ ﴿١٠٢﴾

  • ১০৩-১০৫. পিতাপুত্র উভয়েই নিজেদের সমর্পিত করল এবং ইব্রাহিম পুত্রকে জবাই করার জন্যে কাত করে শুইয়ে দিল। তখন আমি তাকে বললাম, ‘হে ইব্রাহিম! তুমি তো স্বপ্নের আদেশ সত্যি সত্যি পালন করলে!’ এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করি।

    فَلَمَّا أَسْلَمَا وَتَلَّهُ لِلْجَبِينِ ﴿١٠٣﴾ وَنَادَيْنَاهُ أَن يَا إِبْرَاهِيمُ ﴿١٠٤﴾ قَدْ صَدَّقْتَ الرُّؤْيَا ۚ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ ﴿١٠٥﴾

  • ১০৬-১১০. মনে রেখো, এ ছিল এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাকে সুযোগ দিলাম এক মহান কোরবানির। পুরো বিষয়টি স্মরণীয় করে রাখলাম প্রজন্মের পর প্রজন্মে। ইব্রাহিমের প্রতি সালাম। এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করি।

    إِنَّ هَـٰذَا لَهُوَ الْبَلَاءُ الْمُبِينُ ﴿١٠٦﴾ وَفَدَيْنَاهُ بِذِبْحٍ عَظِيمٍ ﴿١٠٧﴾ وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِينَ ﴿١٠٨﴾ سَلَامٌ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ ﴿١٠٩﴾ كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ ﴿١١٠﴾

  • ১১১-১১৩. নিশ্চয়ই ইব্রাহিম ছিল আমার সত্যিকার বিশ্বাসী বান্দাদের একজন। আমি তাকে ইসহাকের সুসংবাদ দিয়েছিলাম। সে ছিল এক নবী, সৎকর্মশীলদের একজন। আমি ইব্রাহিম ও ইসহাককে বরকত দান করেছিলাম। তাদের বংশধরদের মধ্যে অনেকে ছিল সৎকর্মশীল আর অনেকেই ছিল সুস্পষ্ট সীমালঙ্ঘনকারী।

    إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ ﴿١١١﴾ وَبَشَّرْنَاهُ بِإِسْحَاقَ نَبِيًّا مِّنَ الصَّالِحِينَ ﴿١١٢﴾ وَبَارَكْنَا عَلَيْهِ وَعَلَىٰ إِسْحَاقَ ۚ وَمِن ذُرِّيَّتِهِمَا مُحْسِنٌ وَظَالِمٌ لِّنَفْسِهِ مُبِينٌ ﴿١١٣﴾

  • ১১৪-১২২. মুসা ও হারুনের প্রতি আমি অনুগ্রহ করেছিলাম। তাদেরকে ও তাদের সম্প্রদায়কে আমি (দাসত্বের দুর্ভোগ ও) মহাসংকট থেকে উদ্ধার করেছিলাম। আমি তাদের সাহায্য করেছিলাম। তাই শেষ পর্যন্ত তারা বিজয়ী হয়েছিল। আমি তাদেরকে (করণীয়-বর্জনীয়ের বিবরণসহ) সুস্পষ্ট কিতাব দিয়েছিলাম। তাদেরকে দেখিয়েছিলাম সাফল্যের সরলপথ। প্রজন্মের পর প্রজন্মে তাদের আমি স্মরণীয় করে রেখেছি। মুসা ও হারুনের প্রতি সালাম। তারা উভয়েই ছিল আমার প্রকৃত বিশ্বাসী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।

    وَلَقَدْ مَنَنَّا عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَارُونَ ﴿١١٤﴾ وَنَجَّيْنَاهُمَا وَقَوْمَهُمَا مِنَ الْكَرْبِ الْعَظِيمِ ﴿١١٥﴾ وَنَصَرْنَاهُمْ فَكَانُوا هُمُ الْغَالِبِينَ ﴿١١٦﴾ وَآتَيْنَاهُمَا الْكِتَابَ الْمُسْتَبِينَ ﴿١١٧﴾ وَهَدَيْنَاهُمَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ ﴿١١٨﴾ وَتَرَكْنَا عَلَيْهِمَا فِي الْآخِرِينَ ﴿١١٩﴾ سَلَامٌ عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَارُونَ ﴿١٢٠﴾ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ ﴿١٢١﴾ إِنَّهُمَا مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ ﴿١٢٢﴾

  • ১২৩-১৩২. নিঃসন্দেহে ইলিয়াসও ছিল রসুলদের একজন। স্মরণ করো! সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল, তোমরা কি আল্লাহ-সচেতন হবে না? তোমরা মহান স্রষ্টা আল্লাহকে ছেড়ে ‘বায়াল’-এর (মূর্তির) উপাসনা করছ? অথচ আল্লাহই তোমাদের ও তোমাদের বাপদাদাদের প্রতিপালক। কিন্তু তার সম্প্রদায় তাকে মিথ্যাবাদী বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল, পরিণামে ওদেরকে অবশ্যই (মহাবিচার দিবসে) শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। অবশ্য আল্লাহর সত্যিকার বান্দাদের কথা আলাদা। আমি ইলিয়াসকে পরবর্তী বংশধরদের মাঝে স্মরণীয় করে রেখেছি। ইলিয়াসের প্রতি সালাম। এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করি। সে ছিল প্রকৃত বিশ্বাসী বান্দাদের একজন।

    وَإِنَّ إِلْيَاسَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ ﴿١٢٣﴾ إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿١٢٤﴾ أَتَدْعُونَ بَعْلًا وَتَذَرُونَ أَحْسَنَ الْخَالِقِينَ ﴿١٢٥﴾ اللَّـهَ رَبَّكُمْ وَرَبَّ آبَائِكُمُ الْأَوَّلِينَ ﴿١٢٦﴾ فَكَذَّبُوهُ فَإِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ ﴿١٢٧﴾ إِلَّا عِبَادَ اللَّـهِ الْمُخْلَصِينَ ﴿١٢٨﴾ وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِينَ ﴿١٢٩﴾ سَلَامٌ عَلَىٰ إِلْ يَاسِينَ ﴿١٣٠﴾ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ ﴿١٣١﴾ إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ ﴿١٣٢﴾

  • ১৩৩-১৩৮. নিশ্চয়ই লূতও ছিল আমার রসুলদের একজন। পেছনে (দুরাচারীদের সাথে) থেকে যাওয়া এক বৃদ্ধা ছাড়া তাকে ও তার পরিবারের সবাইকে আমি উদ্ধার করেছিলাম। তারপর দুরাচারীদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছিলাম। তোমরা তো প্রতিনিয়ত এই ধ্বংসস্তূপের চারপাশ দিয়ে যাতায়াত করো। এরপরও কি (তোমরা তোমাদের সহজাত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করবে না) তোমাদের বোধোদয় হবে না?

    وَإِنَّ لُوطًا لَّمِنَ الْمُرْسَلِينَ ﴿١٣٣﴾ إِذْ نَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ أَجْمَعِينَ ﴿١٣٤﴾ إِلَّا عَجُوزًا فِي الْغَابِرِينَ ﴿١٣٥﴾ ثُمَّ دَمَّرْنَا الْآخَرِينَ ﴿١٣٦﴾ وَإِنَّكُمْ لَتَمُرُّونَ عَلَيْهِم مُّصْبِحِينَ ﴿١٣٧﴾ وَبِاللَّيْلِ ۗ أَفَلَا تَعْقِلُونَ ﴿١٣٨﴾

  • ১৩৯-১৪৮. নিঃসন্দেহে ইউনুস ছিল রসুলদের একজন। স্মরণ করো! (বিরক্ত হয়ে দেশ ছেড়ে) পালিয়ে যাওয়ার জন্যে সে উঠল যাত্রীবোঝাই নৌকায়। (নৌকা অচল হওয়ার পর ‘কে অলক্ষুনে’ তা নির্ণয়ের জন্যে) লটারিতে উঠল তার নাম। (এরপর যাত্রীরা তাকে পানিতে ফেলে দিল) এক বিশাল মাছ তাকে গিলে ফেলল। সে নিজেকে ধিক্কার দিতে লাগল! সে যদি তখন আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা না করত, তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত সে মাছের পেটেই থেকে যেত। অবশেষে ইউনুসকে ক্লান্ত ও অসুস্থ অবস্থায় এক বিরান বালুচরে নিক্ষেপ করলাম। তাকে ছায়া দেয়ার জন্যে বড় পাতাযুক্ত গাছ উদ্‌গত করলাম। আমি তাকে লক্ষ বা ততোধিক লোকের কাছে রসুল হিসেবে পাঠিয়েছিলাম। (সে আবার ফিরে গেল তাদের মাঝে।) এবার তারা তাকে বিশ্বাস করল। ফলে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত আমি তাদেরকে পার্থিব সুখসম্পদ দান করলাম।

    وَإِنَّ يُونُسَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ ﴿١٣٩﴾ إِذْ أَبَقَ إِلَى الْفُلْكِ الْمَشْحُونِ ﴿١٤٠﴾ فَسَاهَمَ فَكَانَ مِنَ الْمُدْحَضِينَ ﴿١٤١﴾ فَالْتَقَمَهُ الْحُوتُ وَهُوَ مُلِيمٌ ﴿١٤٢﴾ فَلَوْلَا أَنَّهُ كَانَ مِنَ الْمُسَبِّحِينَ ﴿١٤٣﴾ لَلَبِثَ فِي بَطْنِهِ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ ﴿١٤٤﴾ فَنَبَذْنَاهُ بِالْعَرَاءِ وَهُوَ سَقِيمٌ ﴿١٤٥﴾ وَأَنبَتْنَا عَلَيْهِ شَجَرَةً مِّن يَقْطِينٍ ﴿١٤٦﴾ وَأَرْسَلْنَاهُ إِلَىٰ مِائَةِ أَلْفٍ أَوْ يَزِيدُونَ ﴿١٤٧﴾ فَآمَنُوا فَمَتَّعْنَاهُمْ إِلَىٰ حِينٍ ﴿١٤٨﴾

  • ১৪৯-১৫০. এবার ওদেরকে জিজ্ঞেস করো, (ওরা কি মনে করে) ‘আল্লাহর জন্যে কন্যা আর ওদের জন্যে পুত্র? অথবা আমি ফেরেশতাদের নারীরূপে বানিয়েছি আর ওরা তা দেখেছিল?’ ১৫১-১৫৭. এটা ওদের মনগড়া কথা যে, ‘আল্লাহ সন্তান জন্ম দিয়েছেন।’ ওরা নির্ঘাত মিথ্যাবাদী (যখন ওরা বলে) ‘তিনি পুত্রের পরিবর্তে কন্যা পছন্দ করেছেন।’ তোমাদের কী হয়েছে যে, তোমরা এমন ভ্রান্ত ধারণাকে প্রশ্রয় দিচ্ছ? তাহলে তোমরা কি তোমাদের সহজাত বিচারবুদ্ধিকে কাজে লাগাবে না? নাকি তোমরা মনে করো তোমাদের কাছে কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে? তোমরা সত্যবাদী হলে তোমাদের কিতাব পেশ করো।

    فَاسْتَفْتِهِمْ أَلِرَبِّكَ الْبَنَاتُ وَلَهُمُ الْبَنُونَ ﴿١٤٩﴾ أَمْ خَلَقْنَا الْمَلَائِكَةَ إِنَاثًا وَهُمْ شَاهِدُونَ ﴿١٥٠﴾ أَلَا إِنَّهُم مِّنْ إِفْكِهِمْ لَيَقُولُونَ ﴿١٥١﴾ وَلَدَ اللَّـهُ وَإِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ ﴿١٥٢﴾ أَصْطَفَى الْبَنَاتِ عَلَى الْبَنِينَ ﴿١٥٣﴾ مَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ ﴿١٥٤﴾ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ﴿١٥٥﴾ أَمْ لَكُمْ سُلْطَانٌ مُّبِينٌ ﴿١٥٦﴾ فَأْتُوا بِكِتَابِكُمْ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ ﴿١٥٧﴾

  • ১৫৮-১৫৯. কিছু মানুষ আল্লাহ ও জ্বীনদের মাঝে আত্মীয়তার সম্পর্ক কল্পনা করেছে। অথচ জ্বীনেরাও জানে যে, (মহাবিচার দিবসে) তাদেরকেও জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে। ওদের সমস্ত অলীক কল্পনা ও কথা থেকে আল্লাহ পবিত্র, মহামহান! ১৬০. আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দারা কখনো এ ধরনের কথা বলে না।

    وَجَعَلُوا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجِنَّةِ نَسَبًا ۚ وَلَقَدْ عَلِمَتِ الْجِنَّةُ إِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ ﴿١٥٨﴾ سُبْحَانَ اللَّـهِ عَمَّا يَصِفُونَ ﴿١٥٩﴾ إِلَّا عِبَادَ اللَّـهِ الْمُخْلَصِينَ ﴿١٦٠﴾

  • ১৬১-১৬৩. তোমরা ও তোমরা যাদের উপাসনা করো তারা—সবাই মিলেও জাহান্নামের আগুনে প্রবেশকারী ছাড়া অন্য কাউকেই আল্লাহ সম্পর্কে বিভ্রান্ত করতে পারবে না।

    فَإِنَّكُمْ وَمَا تَعْبُدُونَ ﴿١٦١﴾ مَا أَنتُمْ عَلَيْهِ بِفَاتِنِينَ ﴿١٦٢﴾ إِلَّا مَنْ هُوَ صَالِ الْجَحِيمِ ﴿١٦٣﴾

  • ১৬৪-১৬৬. (ফেরেশতারা বলবে) ‘আমাদের প্রত্যেকের জন্যেই নির্ধারিত স্থান রয়েছে। আমরা সুবিন্যস্ত। আমরা সর্বদা তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করি।’

    وَمَا مِنَّا إِلَّا لَهُ مَقَامٌ مَّعْلُومٌ ﴿١٦٤﴾ وَإِنَّا لَنَحْنُ الصَّافُّونَ ﴿١٦٥﴾ وَإِنَّا لَنَحْنُ الْمُسَبِّحُونَ ﴿١٦٦﴾

  • ১৬৭-১৭০. সত্য অস্বীকারকারীরা বলত, ‘পূর্ববর্তীদের কাছে আসা কোনো কিতাব (যদি আমরা উত্তরাধিকারী হিসেবে) পেতাম, তবে আমরা অবশ্যই আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দা হতাম।’ (কিন্তু বাস্তবে যখন কোরআন ওদের কাছে এলো তখন) ওরা তা সত্য বলে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাল। ওরা শিগগিরই এর পরিণাম জানতে পারবে।

    وَإِن كَانُوا لَيَقُولُونَ ﴿١٦٧﴾ لَوْ أَنَّ عِندَنَا ذِكْرًا مِّنَ الْأَوَّلِينَ ﴿١٦٨﴾ لَكُنَّا عِبَادَ اللَّـهِ الْمُخْلَصِينَ ﴿١٦٩﴾ فَكَفَرُوا بِهِ ۖ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ ﴿١٧٠﴾

  • ১৭১-১৭৩. আমার প্রেরিত বান্দাদের নিকট আমার প্রতিশ্রুতি সুস্পষ্ট। অবশ্যই তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে, অবশ্যই (সত্যানুরাগী) বাহিনী বিজয়ী হবে।

    وَلَقَدْ سَبَقَتْ كَلِمَتُنَا لِعِبَادِنَا الْمُرْسَلِينَ ﴿١٧١﴾ إِنَّهُمْ لَهُمُ الْمَنصُورُونَ ﴿١٧٢﴾ وَإِنَّ جُندَنَا لَهُمُ الْغَالِبُونَ ﴿١٧٣﴾

  • ১৭৪-১৭৫. অতএব হে নবী! কিছুকালের জন্যে তুমি ওদের উপেক্ষা করো। তুমি দেখতে থাকো। শিগগিরই ওরা সত্য অস্বীকারের পরিণাম প্রত্যক্ষ করবে।

    فَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍ ﴿١٧٤﴾ وَأَبْصِرْهُمْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ ﴿١٧٥﴾

  • ১৭৬-১৭৭. তবে কি ওরা আমার আজাব ত্বরান্বিত করতে চায়? ওদের আঙিনায় যখন আমার আজাব নেমে আসবে, সেই সকালটা ওদের জন্যে হবে কত না দুর্ভোগের! ১৭৮-১৭৯. অতএব কিছুকালের জন্যে তুমি ওদের উপেক্ষা করো। আর ওদের দেখতে থাকো। শিগগিরই ওরা ওদের পরিণাম প্রত্যক্ষ করবে।

    أَفَبِعَذَابِنَا يَسْتَعْجِلُونَ ﴿١٧٦﴾ فَإِذَا نَزَلَ بِسَاحَتِهِمْ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنذَرِينَ ﴿١٧٧﴾ وَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍ ﴿١٧٨﴾ وَأَبْصِرْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ ﴿١٧٩﴾

  • ১৮০-১৮২. সত্য অস্বীকারকারীদের অলীক বিভ্রান্ত ধারণা থেকে তোমার প্রতিপালক মহাপবিত্র। তিনি সর্বশক্তিমান, মহামহান। রসুলদের প্রতি সালাম। সকল প্রশংসা মহাবিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহরই প্রাপ্য।

    سُبْحَانَ رَبِّكَ رَبِّ الْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ ﴿١٨٠﴾ وَسَلَامٌ عَلَى الْمُرْسَلِينَ ﴿١٨١﴾ وَالْحَمْدُ لِلَّـهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ﴿١٨٢﴾

  • 00:00:00 / 00:00:00
  • عرب / বাংলা

ডাউনলোড